বিলুপ্তির পথে তিমি


এই পৃথিবীতে অসংখ্য,অগণিত প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে স্তন্যপায়ী বা স্থূলাকার র্সববৃহৎ জন্তু হচ্ছে তিমি।একটি বৃহত্তম তিমি বা নীল তিমি লম্বায় 100  ফুট বা 32 মিটার।এবং ওজনে 170 টন
হয়।প্রনীবিদ্যাবিশারদ এদের নাম  দিয়েছেন:ব্যালিনপটেরা মালকুলিমাস।
এই প্রাণী বৃহৎ অবলুপ্ত ডাইনোসর এর 4 গুন।300 টা হাতি এবং 1600 মানুষের সমান আয়তনের ওজন বিশিষ্ট।এরা সমুদ্রে বিশেষ করে এন্টার্কটিকা মহাসাগরে বাস করে।একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে ঠান্ডায় বাস করতে গিয়ে এদের বিশেষ কত গুলো পরিবর্তন গ্রহণ করতে হয়েছে।এরা দেখতে মাছের মত কারন,কারণ পানিতে বাস করে।হাত পা নেই তার বদলে আছে মাছের মতো লেজ এবং সামনে দুটো পাখনা।কিন্তু আরও একটি বিশেষ পরিবর্তন এদের গ্রহণ করতে হয়েছে প্রকৃতিক পরিবর্তনের জন্য।স্তন্যপায়ী তিমি ঠান্ডায় বাস করে।এর জন্য এদের দেহের তাপ কমে যেতে পারে।তাই ত্বকের নিচে জমা হয়েছে এক দের ফুট মেদ এবং এরও নিচে দেহের অন্যান্য অঙ্গাদি রয়েছে।তাই উষ্ণরক্ত বিশিষ্ট এই প্রণীটির শরীর জমে যায় না।তাপের তারতম্য হয় না।আর এই প্রচুর মেদই এই প্রণীটির জন্য কাল হয়েছে।
নীল তিমি (Blue whale),সি তিমি ( Sea whale), ফিন তিমি (Fin whale),কুঁদোওয়ালা তিমি (Humpback) থেকে মেদ সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।এদের দাত নেই,তাই এরা মিস্টিসেটি উপর্বগভুক্ত।অডমটসেটি উপর্বগ ভুক্ত প্রাণীদের (তিমি)মধ্যে কিলার বা খুনে তিমি, ডলফিন, পরপাজ ,র্স্পাম তিমি প্রধান তবে তাদের মেদ খুবই অল্প এবং তারা আকারেও ছোট।
সব তিমিরা যে অতিকায় বিশাল এমন কিন্তু নয়।র্স্পাম তিমি ও খুনেদের (কিলার ওয়েল)আকার হয়ে থাকে ১০ থেকে ১৮ মিটার।
আমরা আজ তিমি দের নিয়ে ভাববো।বৃহৎ বপুর হওয়া সত্ত্বেও এরা খুদে ক্রাস্টাসিয়া ক্রিল (ইউফাওসিয়া সুপারবা)খেয়ে জীবন ধারণ করে।এক টন মাংস তৈরি করতে একটা তিমির 10 টন ক্রিল খেতে হয়।10 টন ক্রিল কে 100 টন এককোষী উদ্ভিদ খেতে হয়।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে ঐ পরিবেশে সবাই ক্রিল এর উপর এবং ক্রিল জলজ উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল। কিলার ওয়েল (বা খুনে তিমি )ও স্কুইড খাদক র্স্পাম তিমি খুব সাংঘাতিক।খুনেরা নীল তিমির ৮ ভাগের এক ভাগ হলেও একঝাঁক (প্রায় 40 টা )খুনে একটি নীল তিমি কে আক্রমণ করে ছিড়ে এর জিহ্বা এবং আন্যান্য অঙ্গ খেয়ে ফেলে।
প্রায় 4000 বছর ধরে তিমি শিকারের নজির আছে।আগে এই কাজ খুবই বিপজ্জনক হলেও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের আবিষ্কারের ফলে এটা খুবই সহজ হয়েছে।জাহাজে চড়ে হার্পুন দিয়ে এদের শিকার করা যায়।তারপর কারখানায় এনে চামড়া ছাড়িয়ে মেদ কেটে বয়লারে সিদ্ধ করে তেল বানানো হয়।একটি তিমি থেকে প্রায় 25 টন তেল পাওয়া যায়।এছাড়া মাংস ও খাওয়া হয়।এই তেল জ্বালানিতে,রান্না করায় ,তৈলাক্তকরন (Lubricating)-এ ব্যবহৃত হয়।এছাড়া বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয় সাবান তৈরীতে।চিরুনি বা চালুনির ন্যায় ব্যবহৃত,ব্যালিন,তা দিয়ে বহু সৌখিন দ্রব্যাদি তৈরি হয়।একটি তিমি থেকে দেড় টন ব্যালিন পাওয়া যায়।আর এক টনের দাম 2000 পাউন্ড।তেল থেকে গ্রিজ, মার্জারিন,লুব্রিকেটিং এবং ভোজ্যতেল হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
1930 সালে যেখানে 4200 নীল তিমি ছিল সেখানে 1963 সনে 2200 হয়েছে।1958-1959 সালের একটি জরিপে দেখা যায় শুধুমাত্র ঐ বছর তিমি শিকারীরা 27,128 টি তিমি শিকার করে।র্বতমানে এক দেড় হাজার আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
তারা এখন প্রায় শেষ হতে চলেছে।এদের বংশ বিস্তারের জন্য নজর দেওয়া হচ্ছেনা।কারন,প্রজননক্ষমতার দিক দিয়ে বিচার করলে বৃহৎ প্রানীরা স্বল্পতম বংশ বিস্তারে আগ্রহী।ফলে বংশ বিস্তারের বদলে তারা মানুষ ও খুনেদের হাতে মারা যাচ্ছে।কয়েকবছরের মধ্যেই এরা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।এদের আর দেখা যাবে না।ঐতিহাসিক যুগের অতিকায় ডাইনোসরের মত এরাও ইতিহাস তৈরি করবে।কিন্ত তার থেকেও বড় কথা আমরা আমাদের একটা বিশাল সম্পদ হারাব।আমরা কী চিন্তা করছি এদের থেকে যা পাওয়া যাচ্ছে অন্য কিছু থেকে তা পাব কিনা?✴





এই  পৃথিবীর আরও আশ্চর্যজনক ও চমকপ্রদ তথ্য সংগ্রহ করতে সব সময়ই সাথে থাকুন
Www.naturelife.Ga
এর সঙ্গে।
ধন্যবাদ।
Share This

0 Response to "বিলুপ্তির পথে তিমি"

Post a Comment

আপনার মন্তব্য জানান